হাব নিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টিকারীরা সুযোগ সন্ধানী-মামুনুল হক
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সাথে সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে করণীয় শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা আজ (১৮ আগস্ট, ২০২৪) রোববার ঢাকার নয়া পল্টনের হোটেল ভিক্টোরীর সাংগু হলে অনুষ্ঠিত হয়। হাব উলামা ফোরাম এ সভার আয়োজন করে। এতে উলামা ফোরামের সিনিয়র সহ সভাপতি মাওলানা হাবিবুল্লাহ মুহাম্মাদ কুতুবুদ্দীনের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ শামীম সাঈদী, হাবের সিনিয়র সহ সভাপতি মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী, মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার, সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরোয়ার, সাবেক সহ-সভাপতি ফরিদ আহমেদ মজুমদার, বায়রার সাবেক কালচারাল সেক্রেটারি মোবারক উল্লাহ শিমুল, মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার বাদলুর রহমান, এজেন্সি মালিক কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী, আক্তারুজ্জামান প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন, হাবের জনসংযোগ সচিব মাওলানা জোনায়েদ গুলজার।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন, হাব একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। এজেন্সি মালিকরা ব্যবসা নয়, আল্লাহর মেহমানদের সেবা করেন। কিন্তু আওয়ামীলীগ সব জায়গায় রাজনীতি ঢুকিয়ে দিয়েছে। হাবের মত জায়গায় রাজনীতি থাকবে কেন? তিনি বলেন, এখানে কোন রাজনীতি নয়, সবাই মিলেমিশে থাকবেন। বিএনপি আপনাদের যেকোন সমস্যায় পাশে থাকবে। কোন সুবিধাবাদী, নব্য লোকদের পাতাতা দিবেন না।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, হাব একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এখানেও অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা মূলত সুযোগ সন্ধানী। আশা করি আজকের পর থেকে আর অস্থিরতা থাকবে না। এজন্য আপনাদের নিজেদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমার আশা করি আগামী হজে হাজীরা ভালো মানের সেবা পাবেন।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, গত ৫ আগস্ট দেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে। তবে এখনো হাসপাতালগুলোতে যারা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তারা ব্যথার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। তাদরে জন্য আমরা দোয়া করি। তিনি আরো বলেন, হজ এজেন্সি মালিকরা আল্লাহর কাছে উত্তম প্রতিদানের আশায় কাজ করেন। তারা ব্যবসা নয়, হাজীদের সেবা করে থাকেন। এজন্য হকপন্থি আলেমরাও আপনাদের সাথে রয়েছে। আমরা আগামীতে আরো ভালো সেবা দিবেন জাতি এমনটাই প্রত্যাশা করে।
বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকার আহবান হাবের: গতকাল এক বিবৃতিতে হাবের সিনিয়র সহ সভাপতি মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী ও মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী তীব্র আন্দোলনের মুখে দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই একটি কুচক্রী মহল হজ্জ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার লিপ্ত রয়েছে- যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। অপপ্রচারকারিরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে হাব এর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপপ্রয়াস চালাচেছ। তারা হাব এর বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও টিকিট সিন্ডিকেটের অভিযোগ এনে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে তা বানোয়াট, মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
হাব একটি অরাজনৈতিক ব্যবসায়িদের অলাভজনক সংগঠন হিসেবে কাজ করে আসছে। আল্লাহর মেহমান হাজীদের সেবায় নিয়োজিত হজ এজেন্সীগুলোর মালিকদের বেশির ভাগই এদেশের আলেম ওলামা ও ধর্মপ্রাণ নাগরিক। নিয়ম অনুযায়ী তাদের সরাসরি ভোটে হাব এর কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়ে আসছে। এখানে কখনও দলীয় বিবেচনা কোন সময়ই প্রাধান্য পায় না। হাব এর বর্তমান কমিটিও তার ব্যতিক্রম নয়। হজ ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠু ও সুন্দর করা এবং হজ এজেন্সীগুলোর সেবার কার্যক্রম করা হাব এর প্রধান কাজ। ধর্ম মন্ত্রণালয় নির্ধারিত ও ঘোষিত হজ প্যাকেজ মূল্যের আলোকেই হাব এর হজ প্যাকেজ ঘোষিত হয়ে থাকে। এই প্যাকেজ মূল্য নির্ধারণের সময় মতামত দেয়া ছাড়া হাবের আর কোন ভূমিকা থাকে না। হাব বরাবরই হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ কমিয়ে হজ প্যাকেজ মূল্য কমানোর জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোরালো অনুরোধ জানিয়ে থাকে। হজের বিমান ভাড়া কমানোর জন্য প্রতিবছরই হাব জোর দাবী জানিয়ে আসছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সই বিমান ভাড়া নির্ধারণ করে থাকে। হজের বিমান ভাড়া কমানোর জন্য হজযাত্রী পরিবহন উন্মুক্ত করে দেয়ার জন্য হাব বছরের পর বছর দাবি জানিয়ে আসছে। ফলে বিমান ভাড়া নির্ধারণে এমনকি এ ব্যাপারে এখানে হাব-এর সিন্ডিকেটের অভিযোগ একেবারেই কাল্পনিক। হজের ব্যয় নির্ধারণের ক্ষেত্রে হাব এর অনিয়ম, দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট করার কোন সুযোগই নেই বরং কোন এজেন্সী সরকার ঘোষিত প্যাকেজ মূল্য ও তার আলোকে হাব ঘোষিত প্যাকেজ মূলোর আলোকে প্যাকেজ মূল্য নিয়ে হজযাত্রীদের সাথে কোন অনিয়ম করে থাকলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় অভিযুক্ত এজেন্সীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে এবং হাবও এই ধরনের অভিযোগ পেলে এজেন্সীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
হজযাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে হজে যেতে পারে তার জন্য দেশে হাব- এর তদারকি টিম সার্বক্ষণিক কাজ করে থাকে। অনুরূপ মক্কা মদিনায় ও হজযাত্রীদের সেবায় হাবের টিম কাজ করে থাকে। ফলে গত কয়েক বছরে হজ এজেন্সীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ অনেক কমে এসেছে। কিছু এজেন্সীর বিরুদ্ধে কখনো কখনো অনিয়মের অভিযোগ উঠে সেগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। প্রতারণার শিকার হয়ে কোন হজযাত্রীর হজ যাত্রায় অনিশ্চয়তা দেখা দিলে হাব সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীকে পাঠানোর জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এই কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতারণার শিকার হয়ে হজে যেতে না পারার অভিযোগ নেই বললেই চলে। হজ ব্যবস্থাপনায় শৃংখলা প্রতিষ্ঠার কারণে হাব বিভিন্ন মহলে যেখানে প্রশংসিত যেখানে হাবের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনে বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে তা খুবই দুঃখজনক।
আমরা এধরণের বানোয়াট, মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। কোন স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে ও তথ্য যাচাই-বাছাই না করে হাব এর বিষয়ে কোন নেতিবাচক খবর প্রচার না করার জন্য আমরা সংবাদ মাধ্যমসহ সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।