সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সকালের বিভিন্ন অনুষ্ঠান
ঢাকা,২১ নভেম্বর, (আইএসপিআর প্রেস বিজ্ঞপ্তি): আজ বৃহস্পতিবার (২১-১১-২০১৩) যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদ্যাপিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির শুরুতে দেশের সকল সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মোঃ আবদুল হামিদ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পৃথক পৃথকভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করে। পুস্পস্তবক অর্পণকালে শহীদদের স্মরণে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে এসে পৌঁছলে তাঁদেরকে স্বাগত জানান তিন বাহিনী প্রধানগণ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার।
মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া, নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মোহাম্মদ ইনামুল বারী নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমান বাহিনী প্রধান বঙ্গভবনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।
শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে গমন করেন। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পিএসও লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক এবং মহাপরিচালকবৃন্দ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্বাচিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করেন। তিনি তাদের হাতে সম্মানী চেক এবং উপহার হিসেবে মোবাইল সেট ও শাল/চাদর তুলে দেন। সংবর্ধনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ———————————————————————————————————————— (ভাষণের কপি সংযুক্ত)———————————।
৭ বীরশ্রেষ্ঠের নিকট আত্মীয়সহ প্রায় ৬০ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীগণ সংবর্ধনায় যোগ দেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অবঃ) এ বি তাজুল ইসলাম, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া, নৌবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মোহাম্মদ ইনামুল বারী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক ও প্রতিরক্ষা সচিব খোন্দকার মোঃ আসাদুজ্জামান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকসহ উর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সাথে চা চক্রে মিলিত হন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আজ নৌবাহিনী প্রধান নৌবাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের পরিবারবর্গের সম্মানার্থে পৃথক সংবর্ধনার আয়োজন করেন। সেনা বাহিনী প্রধান আগামী রোববার ২৪ নভেম্বর এবং বিমান বাহিনী প্রধান আগামীকাল শুক্রবার ২২ নভেম্বর স্ব স্ব বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করবেন।
দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। সাভার, বগুড়া, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, যশোর, রংপুর এবং রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসসমূহে এবং খুলনা নৌ ঘাঁটিতে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০১৩ উপলক্ষে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
গণমাধ্যমেও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে নানামুখী অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। গতকাল (২০-১১-২০১৩) বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত আটটার বাংলা সংবাদের পর ‘‘বিশেষ অনির্বাণ’’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। বাংলাদেশ বেতার আজ (২১-১১-২০১৩) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ‘‘বিশেষ দুর্বার’’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। বেসরকারি টিভি চ্যানেলসমূহ ২১ নভেম্বরের পরে ‘‘বিশেষ অনির্বাণ’’ অনুষ্ঠানটি পর্যায়ক্রমে সম্প্রচার করবে। এদিকে, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও, সশস্ত্র বাহিনীর আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা, চিত্রাঙ্কন এবং কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা (সদরঘাট), নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজসমূহ আজ (২১-১১-২০১৩) বেলা ১টা হতে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।