বিভিন্ন সংস্থা প্রধানের ৫০টি পদ মানোন্নয়নের সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে: বিসিএস সমন্বয় কমিটি
ঢাকা, ১৫ ডিসেম্বর, (এনএসনিউজওয়্যার) –বিভিন্ন মন্ত্রণালয়াধীন দপ্তর, সংস্থা, বিভাগ ও করপোরেশন প্রধানের ৩৩টি পদ গ্রেড-২ থেকে গ্রেড-১ এবং ২০টি পদ গ্রেড-৩ থেকে গ্রেড-২ এ উন্নীত করার সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য বিসিএস সমন্বয় কমিটি জোর দাবি জানাচ্ছে।
সময়ের প্রেক্ষাপটে এ মানোন্নয়ন সংস্থাসমূহের জন্য অতি জরুরি হয়ে পড়েছে এবং এরফলে কোন ব্যক্তি বিশেষ বা পদধারী কর্মকর্তা সুবিধা পাবেন না। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অনুপ্রাণিত হবে এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করবে। অন্যথায় বিভিন্ন ক্যাডারের মেধাবী, দক্ষ এবং যোগ্য কর্মকর্তাগণের বঞ্চনার কাহিনী আরো দীর্ঘাতর হবে বলে বিসিএস সমন্বয় কমিটি মনে করে।
দীর্ঘ ২৮ বছরের পুরাতন একটি সিদ্ধান্ত নানান প্রশাসনিক জটিলতা কাটিয়ে বাস্তবায়নের পর্যায়ে এসেছে। অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন শাখার ১৯৮৫ সালের ৩০ জুন তারিখে জারিকৃত নোটিফিকেশন এমএফ-এফডি (বাস্তবায়ন-৩)-এস.জি-১-৮৫-১১৩ (গঋ-ঋউ(ওসঢ়-৩)-ঝ.এ-১-৮৫-১১৩) তে বলা হয়েছে প্রতিটি ক্যাডারের ন্যূনতম একটি করে পদ গ্রেড-১ থাকতে হবে।
অনেক বাঁধা-বিপত্তি পার হয়ে যখন তা বাস্তবায়নের পর্যায়ে এসেছে তখন কেউ কেউ বিষয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। এতে বিসিএস সমন্বয় কমিটি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তাই প্রকৃত ঘটনা প্রবাহ না জেনে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য না করার জন্য বিসিএস সমন্বয় কমিটি সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছে।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ২৬টি ক্যাডার ও বিভিন্ন ফাংশনাল গ্র“পের সংগঠন ‘বিসিএস সমন্বয় কমিটি‘ এবং প্রকৌশলী, কৃষিবিদ ও চিকিৎসকদের সংগঠন ‘প্রকৃচি‘ বিভিন্ন অধিদপ্তরের প্রধানের পদ সচিব পদমর্যাদায় গ্রেড-১ এ উন্নীত করার জন্য দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছে। ১৯৮৫ সালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নোটিফিকেশনটি দীর্ঘ সময়েও বাস্তবায়িত হয়নি। প্রকৃচি ও বিসিএস সমন্বয় কমিটি এ নোটিফিকেশেন বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে বিভিন্ন সময় দাবি জানিয়ে আসছে।
এর ধারাবাহিকতায় বিসিএস সমন্বয় কমিটি ও প্রকৃচি নেতৃবৃন্দ পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করে। ১৯ জুলাই ২০১২ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিসিএস সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ সাক্ষাত করে আবারো জোরালোভাবে দাবিটি তুলে ধরে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সংস্থা প্রধানের পদের মানোন্নয়নের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেন এবং সাচিবিক কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ৩১ জুলাই ২০১২ তারিখে একটি কমিটি গঠন করে দেন।
প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসন বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে প্রধান করে প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ প্রকৃচি ও বিসিএস সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃৃেন্দর সমন্বয়ে ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি বৈঠক করে সরকারের কোন সংস্থা প্রধানের পদ কোন স্তরে উন্নীত করা যায় সে বিষয়ে একটি সুপারিশমালা প্রণয়ন করে। এ সুপারিশমালার আলোকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর প্রাথমিক অনুমোদন গ্রহণ করে। এরপর বিধি মোতাবেক ১২ সেপ্টেম্বর তারিখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনুমোদন নেয়া হয়।
এরপর প্রস্তাবটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ অধিশাখা ২৭ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে প্রস্তাবটি অনুমোদন দেয়। এতে সরকারি আদেশ জারির পূর্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদন গ্রহণের শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদন গ্রহণের জন্য প্রস্তাবটি তাঁর কার্যালয়ে প্রেরণ করে।
সরকারের বিভিন্ন সংস্থা প্রধানগণের পদের মানোন্নয়ন বিসিএস সমন্বয় কমিটি ও প্রকৃচির প্রায় ৬০ হাজার কর্মকর্তার প্রাণের দাবি। এ দাবির বাস্তায়ন নিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হলে সরকারের বিপুল কর্মকর্তারা আবারো হতাশার শিকার হবে, যা দেশ ও জাতির জন্য কোন মঙ্গল বয়ে আনবে না বলে বিসিএস সমন্বয় কমিটি মনে করে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি.