“বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাসভবন ও গুলশানস্থ রাজনৈতিক কার্যালয় অবরুদ্ধ”: ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের বিবৃতি
ঢাকা, ২৬ ডিসেম্বর, (এনএসনিউজওয়্যার) — বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ এক বিবৃতিতে বলেন, ” বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাসভবন ও গুলশানস্থ রাজনৈতিক কার্যালয় অবরুদ্ধ।”
ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “বিএনপি চেয়ারপার্সন, জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গত ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁর গুলশানস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে এবং ৫ জানুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচন বন্ধ করতে সারাদেশ থেকে সকল শ্রেণী-পেশার সক্ষম জনগণকে লাল-সবুজের পতাকা হাতে ঢাকায় আসার জন্য ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসী’ ঘোষনা করেন। এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষনার পর থেকেই সরকারের মাথা বিগড়ে গেছে। ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসী’ এর সফলতা আঁচ করতে পেরেই সরকার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিটিকে যেকোন উপায়ে বাধাগ্রস্ত ও ভন্ডুল করতে প্রানপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর তারই অংশ হিসেবে কর্মসূচি ঘোষনার রাত থেকেই বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাসভবন ও গুলশানস্থ রাজনৈতিক কার্যালয় অবরুদ্ধ এবং নেতা-কর্মীদেরকে সেখানে প্রবেশ ও প্রস্থানে বাধা প্রদানের পাশাপাশি সারাদেশে যৌথবাহিনী দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরকে মিথ্যা মামলা ও অভিযোগে গ্রেফতার ও হয়রানী করার এক মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এছাড়া গতরাতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে বিএনপি দলীয় সাংসদ শাম্মী আখতার সহ ৪ জন নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। আজও বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাসভবন ও গুলশানস্থ কার্যালয় অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে। বিএনপি’র নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয় গত তিন মাস থেকেই অবরুদ্ধ করে রেখেছে এই ফ্যাসিষ্ট সরকার। অন্যদিকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে হরণ করার অভিপ্রায়ে সংবাদপত্র ও মিডিয়া কর্মীদের ওপর অঘোষিত সরকারী নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে যাতে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কোন কর্মসূচির বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ জনগণ জানতে না পারে সে ব্যবস্থাও শুরু করেছে সরকার। সরকারের এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপচেষ্টার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “দেশ শাসনে ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে অঢেল সম্পত্তির মালিক বনে যাওয়ার ঘটনা জনগণ জানতে পারা, জনসমর্থন শুন্যের কোঠায় নেমে আসা, নিজেদের অভ্যন্তরীণ হানাহানি এবং রক্তারক্তির হোলিখেলায় বিপর্যস্ত আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এবং প্রহসনের নির্বাচনকে সামনে রেখে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ বন্ধ করার পাঁয়তারা ও যৌথ বাহিনী দিয়ে সারাদেশে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মামলায় জড়ানো, গ্রেফতার ও নির্যাতন-নিপীড়নের এক নিষ্ঠুর খেলায় মেতে উঠেছে। তারা এ খেলায় মেতে ওঠার কারন হলো বিরোধী দল যেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আন্দোলন করতে নিরুৎসাহিত ও ভয় পায়। শাসক দলের দুষ্কর্মের অংশ হিসেবেই যৌথবাহিনী দিয়ে দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার ও রাজনৈতিকভাবে হেনস্তা করার সরকারী অপচেষ্টা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে গণআন্দোলন সৃষ্টি করে সরকারের এহেন অপকর্মের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে জনগণ প্রস্তুত। মির্জা আলমগীর বলেন, বর্তমান সরকার সর্বদিক দিক থেকে ধরাশায়ী বলেই তারা কান্ডজ্ঞান হারিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদেরকে মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতারের নামে পর্যদুস্ত করার পাঁয়তারা করছে। কিন্তু সরকারের এই অপচেষ্টা দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ কখনোই সফল হতে দিবেনা।”
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সরকারের উদ্দেশ্যে দৃঢ়তার সহিত বলেন, “অবিলম্বে সারাদেশে যৌথবাহিনী দিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেফতার ও নির্যাতন নিপীড়ন বন্ধ করুন, জনগণের দাবি মেনে নিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের পথে আসুন, দেশকে সংহাত ও নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত না করে শান্তির পথে আসুন, অন্যথায় জনগণ তাদের দাবি আদায়ে অতীতের মতোই ঐক্যব্ধভাবে গনদাবি মেনে নিতে আপনাদেরকে বাধ্য করবে।”