অতীতের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করতে প্রযুক্তি সাধারণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে: মোস্তাফা জব্বার
প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করার উত্তম উপায় হচ্ছে প্রযুক্তি সাধারণের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেওয়া।
তা না করতে পারলে জাতিকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। আমরা সে কাজটি দৃঢ়তার সাথে করছি, বলেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
জনাব মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, আমরা দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছি। দেশের প্রতিটি গ্রামে
উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি।
মোস্তাফা জব্বার বৃহস্পতিবার রাজধানীর এক হোটেলে টেলিকম অ্যান্ড টেকনলোজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক (টিআরএনবি) আয়োজিত ‘স্মার্ট কানেক্টিভিটি ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিটিআরসি‘র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিম পারভেজ, ডিআইজি হায়দার আলী খান, এমটবের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) এসএম ফারহাদ, আইএসপিএবি‘র সভাপতি এমদাদুল হক, ফাইভার এট হোমের কর্মকর্তা সুমন সাব্বির এবং টিআরএনবি সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এমটবের সাবেক মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ডিজিটাল সংযুক্তি প্রসারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারাবাহিক বিবর্তন। ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তির উপর স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে। ইন্টারনেট প্রসারের পাশাপাশি ডিজিটাল কনটেন্টের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। তা না হলে নতুন প্রজন্ম নিজস্ব সংস্কৃতি ভুলে যাবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল কনটেন্টে যতক্ষণ পর্যন্ত দেশিয় সংস্কৃতি যুক্ত না হবে বিপদের সম্ভাবনা তত বাড়তেই থাকবে। স্মার্ট বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জের নাম হবে ডিজিটাল নিরাপত্তা। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট মানুষ তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন কম্পিউটারের বাংলা ভাষার এই উদ্ভাবক। তিনি বলেন, স্মার্টনেস পোষাকে নয় স্মার্টনেসের জন্য দরকার প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন।
ইন্টারনেটের পাশাপাশি স্মার্ট দুনিয়ায় কনটেন্টের গুরুত্ব তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, এখন আমরা এমন একটি পর্যায়ে আছি, যেভাবে প্রতিদিন অনলাইনে জুয়া বসে, ম্যাসেঞ্জার, হোয়টসআপ ব্যবহার করে হয়রানি করা হয়; সেখানে আমরা একপর্যায়ের অসহায়ত্বের মধ্যে পড়ে গেছি। এটা রোধে ইন্টারনেটে কনটেন্ট ফিল্টারিংয়ের উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি। এই অবস্থাটা আগামীতে আরো ভয়ংঙ্কর হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সেটা মোকাবেলা করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত বলেন, আমরা যত বেশি স্মার্ট হবো তত বেশি আপদ-বিপদ আসবে। এই ব্যাপারে ব্যাপক গণসচেতনতা তৈরির জন্য সাংবাদিকগণ অতীতের মতো আগামীতেও ভূমিকা রাখবেন বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আইএসপি ব্যবসায়ীদের ব্রডব্যান্ড গ্রাহক খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, কম্পিউটার ব্যবসায়ীরা ঘরে ঘরে কম্পিউটার পৌঁছে দিয়েছেন। চাহিদা সৃষ্টি করেছেন। আপনাদেরকেও গ্রামে গ্রামে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দিতে হবে। কেননা ডিজিটাল রূপান্তর মানেই জীবন-জীবিকার মনোন্নয়ন। ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপান্তরের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। সেটি হচ্ছে কানেক্টিভিটি, কানেক্টিভিটি এবং কানেক্টিভিটি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ টিআইএম নূরুল কবির আজকে তরুণদের বক্তব্য শুনে স্মার্ট সমাজ, সরকার ও সেবার নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে আলোকপাত করেন। একইসঙ্গে অংশীজনদের নিয়ে বিদ্যমান নীতিমালায় ঘাটতিগুলো খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন।